প্রথম কখন বিজ্ঞানীগণ সন্ধান পেলো এই পালসার তারকার?
১৯৬৭ সালের পূর্ব পর্যন্ত মহাকাশ বিজ্ঞানীগণ এই তারকার অস্তিত্ব সম্বন্ধে কিছুই জানতেন না। নিউট্রন স্টার সম্বন্ধে যেটুকু ধারণা ছিল তাতে এগুলো হোয়াইট ডর্ফ স্টার (সাদা বামন তারা) মনে করা হতো। ১৯৬৭ সালে ক্যামব্রীজ ইউনিভার্সিটির জসলিন বেল মহাকাশ থেকে প্রাপ্ত কিছু রেডিও সিগনাল নিয়ে গবেষণা করার সময়, অজ্ঞাত কিছু শব্দ শুনে অবাক হয়ে যান, শব্দের উৎস অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে তিনি প্রথম একটি পালসার তারকা সনাক্ত করেন। পরবর্তীতে একই গবেষণায় প্রাপ্ত অবশিষ্ট সিগনাল গুলো থেকে আরো ৩টি পালসার সনাক্ত করা হয়। এখন পর্যন্ত ১৭০০ পালসার তারকা সনাক্ত করা হয়েছে (তথ্য সুত্র: www.naic.edu/~pulsar/pulsar.shtml)।
ঘূর্ণায়মান পালসার তারকা। অন্যান্য তারকার চুতর্দিক থেকে আলো বিচ্ছুরিত হয় আর পালসার তারকার আলো বিচ্ছুরিত হয় শুধু দুই পাশ দিয়ে, এ যেন টর্চ লাইটের শুধু সামনের ও পিছনের দিক দিয়ে আলো বের হওয়া। |
কুরআনে কিভাবে পালসার তারকার উল্লেখ আছে?
পবিত্র কুরআনের ৮৬ নাম্বার সূরার নাম طارق 'ত্বরিক্ব'। উইকিপিডিয়াতে (এই লিংকে দেখুন) ত্বরিক্ব শব্দের অর্থ লিখা হয়েছে Knocker, Striker যেগুলোর বাংলা অর্থ হয় 'যে দরজার কড়া নাড়ে' বা 'আঘাত করে' বা 'ঘা মারে' বা 'করাঘাত করে' এই শব্দগুলোর সবই প্রায় হার্ট বিট বা পালসের মতো। সুতরাং নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে ইংরেজী 'পালসার' ও আরবী 'ত্বরিক্ব' শব্দ দুটি একই অর্থবোধক অর্থাৎ 'করাঘাতকারী'। রেডিও টেলিস্কোপ থেকে প্রাপ্ত শব্দগুলো শুনলেও তা'ই মনে হয় কেউ যেন দরজায় করাঘাত করছে!এখন প্রশ্ন হচ্ছে পালসার একটি তারকা কিন্তু ত্বরিক্ব? আল্লাহ তায়ালা সূরা ত্বরিক্বে'ই এর প্রকৃত পরিচয় বলে দিয়েছেন, তিনি বলেছেন, “ কসম আসমান ও ত্বরিক্বে'র। আপনি কি জানেন ত্বরিক্ব কি? তা একটি সমুজ্জ্বল তারকা” (সূরা ত্বরিক্ব ১-৩)।
সম্মানিত পাঠক ভেবে দেখুন সব থেকে নিকটবর্তী পালসার তারকার অবস্থান পৃথিবী থেকে ৪০০ আলোক বর্ষ দুরে (আলো সেকেন্ডে ১ লক্ষ ৮৬ হাজার কি:মি: গতিতে ১ বছরে যতদুর যায়, ততদুরকে ১ আলোক বর্ষ বলা হয়), এত দুরের একটি তারকা থেকে নির্গত শব্দ শোনা ১৪ শত বছর আগের কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব ছিল না! তাহলে কুরআনে কিভাবে একে 'শব্দকারী তারকা' হিসাবে উল্লেখ করা হলো? একটাই উত্তর অবশিষ্ট থাকে 'এটা তার কাজ যিনি আসমান ও জমীনের সকল রহস্য সম্বন্ধে অবগত'!