Monday, June 15, 2020

و ا  এবং ي (আলিফ, ওয়াও, ইয়া) - কে মাদের হরফ বা অক্ষর বলা হয়, কারণ এই অক্ষরগুলো যাবার, পেশযেরে'র সাথে মিলিত হয়ে এক আলিফ পরিমাণ দীর্ঘ মাদ গঠন করে। যাবারে'র বামে খালি আলিফ, পেশের বামে অয়াও সাকিন  এবং যেরে'র বামে ইয়া সাকিন    থাকলে এই মাদ গঠন হয় যা এক আলিফ পরিমাণ টেনে পড়তে হয়। অন্যান্য অধিকাংশ মাদই এই মাদে'র উপর নির্ভরশীল বলে একে 'মাদে আসলী' বা আসল মাদ বলা হয়।

মাদে আসলী ৬ রকম চেহারায় আয়াতের মধ্যে থাকে, নীচে উল্লেখিত মাদে আসলীর চেহারা গুলো ভাল ভাবে চিনে নিন কারণ প্রায় প্রতিটি আয়াতের ভিতর এক বা একাধিক মাদে আসলী থাকে। 

মাদে আসলী কাকে বলে
নূরানী টাইপের মাদে আসলীর এই রুপগুলো
সৌদি আরব টাইপে একটু ভিন্ন রকম,
যারা সৌদি কুরআনও পড়তে চান তারা পার্থক্যগুলো এই লিংক থেকে জেনে নিন

যখন উপরোক্ত চেহারা গুলো আয়াতের ভিতর থাকবে তখন সে গুলো এক আলিফ পরিমান টেনে পড়তে হবে, একেই মাদে আসলী বা আসল মাদ বলা হয়। 
উদাহরণ স্বরুপ এই শব্দটির  সাধারণ উচ্চারণ ‘ষদিক্বিন’ কিন্তু ২টি মাদের (খাড়া যাবার ও যেরের বামে ইয়া সাকিন) কারণে এর উচ্চারণ হবে ‘ষ-দিক্বি-’। 

নীচের আয়াতটিতে লাল চিহ্নিত মাদে আসলীর ব্যবহার লক্ষ্য করুন, দেখুন যাবারের বামে খালি আলিফ, পেশের বামে অয়াও সাকিন, যেরের বামে ইয়া সাকিন অথবা, যাবার ও যের খাড়া এবং পেশ উল্টা ভাবে আছে কিনা, থাকলেই সেসব স্থানে এক আলিফ টেনে পড়তে হবে।


উপরের অডিওতে তিলাওয়াতকারী এক আলিফের যে পরিমাণ মাদ করেছেন, অনুশীলনের সময় তা থেকে একটু বেশি করুন। আনুপাতিক হারে মাদ কমা বাড়া করা যায়, যেমন, এক আলিফের মাদ যদি ১ সেকেন্ড করা হয়, তাহলে ২ আলিফের মাদ ২ সেকেন্ড, আবার ১ আলিফের মাদ যদি ২ সেকেন্ড করা হয়, তাহলে দুই আলিফের মাদ ৪ সেকেন্ড করা উচিৎ। গুরুত্বপূর্ণ: এক আলিফের মাদ যেহেতু প্রায় সব আয়াতেই একাধিক পরিমাণ আছে তাই মাদ ২/৩ সেকেন্ড দীর্ঘ করুন এবং এসময়ে বাম পাশের শব্দগুলো কি আছে দেখে নিন, পড়া সুন্দর, বাঁধাহীন ও সাচ্ছন্দ্য করার জন্য এটি একটি জনপ্রিয় কৌশল। দ্রষ্টব্য: শেষের শব্দটিতে তিলাওয়াতকারী মাদ ৩ আলিফ পরিমান দীর্ঘ করেছেন কারণ দম ফেলার সুত্র ধরে সেখানে 'মাদে আরজী' নামে আরেকটি মাদ সংগঠিত হয়েছে, যা পরবর্তীতে আলোচনা করা হয়েছে।

নীচের আয়াতটি থেকে মাদে আসলী খুঁজে বের করুন।






যাবারের বামে খালি আলিফে যদি কোন গোল বা শূণ্য চিহ্ন (নীচের আয়াতে লাল চিহ্নটি লক্ষ্য করুন) থাকে তাহলে সেখানে মাদ করা যাবে না। একে আলিফ জাইদা বলে আর গোল চিহ্ন দিয়ে একে উচ্চারণ না করতে নির্দেশ করা হয়েছে। যেখানেই গোল চিহ্ন দেয়া আলিফ থাক সেটার কোনো উচ্চারণ করা যাবে না।



মাদে আসলী'র সুরৎ বা চেহারা সৌদী আরবের কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স থেকে মুদ্রিত কুরআনে একটু ভিন্ন রকম, সেখানে যাবারের বামে খালি আলিফের মতো পেশের বামে খালি অয়াও এবং যেরের বামে খালি ইয়া ব্যবহার করা হয়, এছাড়াও খাড়া যের, যাবার ও পেশের ক্ষেত্রেও কিছু ভিন্নতা আছে। যারা কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স মদীনা কর্তৃক মুদ্রিত কুরআন যাকে মদীনা মাসহাফ (মূল কুরআন যে টাইপে সংরক্ষিত হয়েছিল, বিস্তারিত এখানে দেখুন) বলা হয়, তারা অনুগ্রহ পূর্বক এই লিংক থেকে নূরানী টাইপ কুরআনের সাথে এর পার্থক্যগুলো বুঝে নিন।


কুরআন পড়ার জন্যে মাদে আসলী ছাড়াও অন্যান্য যেসব মাদ অবশ্যই চেনা প্রয়োজন:




Share: