আরবী লাহন শব্দের অর্থ ‘ভুল’। কুরআন পড়ায় যে সব ভুল হয়ে থাকে তাকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে, তা হলো লাহনে জালি ও লাহনে খফি। প্রত্যেক কুরআন পাঠকের এই ভুলগুলো সম্বন্ধে জানা ও পড়ার সময় সচেতন থাকা উচিৎ।
লাহনে জালি বা মারাত্নক ভুল
লাহনে জালি অর্থ মারাত্নক ভুল। কুরআন পড়ার যেসব অবশ্যই পালনীয় নিয়ম-নীতি আছে সেগুলোর লংঘন করাকে লাহনে জালি বলা হয়। যেমন
- এক অক্ষরের স্থলে আরেক অক্ষর পড়া,
- কোন অক্ষর বাড়িয়ে দেয়া যেমন اَحَدْ ‘আহাদ’ শব্দটি উচ্চারণ করার সময় ‘আ’ বলে হাদ বলতে এক মুহুর্তও দেরী করলে ‘আ’ এর হামযার সাথে আরেকটি হামযা যোগ হয়ে উচ্চারণ হয়ে গেল اَـاحَد ‘আ-হাদ’,
- কোন অক্ষর এর উচ্চারণ কমিয়ে দেয়া যেমন, يُوْلَد ‘ইউ-লাদ’ কে يُلَد ‘ইউলাদ’ পড়া, এখানে অয়াও পেশের উচ্চারণ বাদ পড়ে গেল,
- যের, যাবার, পেশ ও সাকিনের একটির স্থানে আরকেটি পড়া যেমন, اِهْدِنَـا ‘ইহ্দিনা’ শব্দটিকে اِهِدِنَـا ‘ইহিদিনা’ পড়া, এখানে ‘হা’ এ সাকিনের স্থানে যের হয়ে গেল,
এইসব ভুলগুলোক লাহনে জালি বা মারাত্নক ভুল বলা হয়। এধরণের ভুল পড়া হলে অর্থের পরিবর্তন হয়ে যাওয়ার ফলে পড়া ও নামাজ উভটায় নষ্ট হয়ে বড় গুনাহ হয়।
লাহনে খফি বা ছোট ভুল
কুরআন পড়ার যেসব তাজবীদ বা নিয়ম-নীতি আছে সেসব ঠিকভাবে আদায় না করাকে লাহনে খফি বলা হয়। কয়েকটি লাহনে খফির উদাহরণ;
- মোটা অক্ষরগুলোকে পাতলা পড়া যেমন ‘খ’ যাবার ‘খ’ না পড়ে ‘খা’ পড়া, ‘র’ যাবার ‘র’ না পড়ে ‘রা’ পড়া,
- ইক্বলাব, ইখফা’র নিয়ম না মেনে পড়া, যেমন ইখফার ‘নুন সাকিন’কে ‘ং’ (অনুস্বর) না পড়ে ‘নুন সাকিন’ই পড়া ইত্যাদী।
এইসব নিয়ম না মেনে পড়লে অর্থের কোন পরিবর্তন না হওয়ায় নামাজ নষ্ট হয়না এবং পড়ারও কোন ক্ষতি হয়না। তবে এরুপ পড়া মাকরুহ তাই লাহনে খফি ভুলগুলোও যেন না হয় তার চেষ্টা করতে হবে।